কাঁচা চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
“কাঁচা চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা এই বিষয়ে লেখার উদ্দেশ্য হলো” বাজারে আখরোট, পিস্তা, কাজু বাদাম, ইত্যাদি পুষ্টিগুণে ভরপুর বাদামগুলোর দাম অনেকটা বেশি, ফলে অনেকেই তা থেকে বঞ্চিত, এবং নিয়মিত ওই বাদামগুলো খাওয়া হয় না।
তবে আমরা কাঁচা চিনা বাদামকে এর বিকল্প হিসেবে নিতে পারি, কারণ চিনা বাদামেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। আর সেটা যদি হয় কাঁচা চিনা বাদাম তাহলে পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে দামী বাদামগুলোর কাছাকাছি চলে আসে।সূচিপত্র ___চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
শীতকালীন এই বাদাম কেন এত জনপ্রিয়
ইংরেজিতে একে বলা হয় পিনাট (Peanut), আর বৈজ্ঞানিক ভাষায় একে বলা হয় Arachis hypogaea, আর এই বাদামকে শীতের সুপারফুড বলা হয়। কারণ এই বাদামের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি অথবা ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে, ফলে শীতকালীন সময়ে বিশেষভাবে উপকারী।
পুষ্টিগুণে ভরপুর চিনা বাদাম
- প্রায় ২৫–২৬ গ্রাম হাই কোয়ালিটি প্লান্ট-ভিত্তিক প্রোটিন,
- কম মাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও প্রচুর মনো,
- পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড,
- গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ যেমনঃ ভিটামিন B কমপ্লেক্স, নিয়াসিন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, জিয়াজেন্থিন ইত্যাদি।
চিনা বাদামের যত উপকারিতা
- হার্টের জন্য উপকারীঃ কাঁচা চিনা বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এতে আছে কোলেস্টেরল-লাওয়ারিং উপাদান, যা হৃদপিণ্ডের পেশিগুলোকেও সুরক্ষা দেয় ও শক্তিশালী রাখে। তবে অতিরিক্ত খেলে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, তাই পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
- অ্যান্টি–ক্যান্সার প্রভাবঃ কাঁচা চিনা বাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল যৌগ ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর। এটি পাকস্থলির ক্যান্সারসহ অন্যান্য টিউমারের ঝুঁকি কমায়।
- মস্তিষ্ক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করেঃ কাঁচা চিনা বাদামে থাকা ট্রিপ্টোফ্যান নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়ক, যা হতাশা ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ কাঁচা চিনা বাদামের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র ১৪। এতে থাকা ফাইবার, প্রোটিন ও ম্যাগনেসিয়াম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারীঃ গর্ভাবস্থায় চিনা বাদাম খেলে মায়ের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ হয় এবং শিশুর ব্রেন ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়তা করে।
- অ্যান্টি-এজিং উপকারিতাঃ চিনা বাদামে থাকা রেজভারেট্রল ও ভিটামিন C এবং E বার্ধক্যজনিত লক্ষণ ধীর করে ও ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে।
কাঁচা চিনা বাদাম খাওয়ার পরিমাণ
যারা এটি নিয়মিত ওষুধ হিসেবে খেতে চান, তারা ২৮ গ্রাম/দিন সাধারণের জন্য অথবা ৫০ গ্রাম/দিন একটিভদের জন্য কিসমিস খেলেই যথেষ্ট।
কাঁচা চিনা বাদাম খাওয়ার সঠিক সময়
কাঁচা চিনা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা পেতে হলে তা সঠিক সময়ে খাওয়াও জরুরী, যদিও চিনা বাদাম খাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই, যে কোনো সময় খাওয়া যেতে পারে, তবে বিশেষজ্ঞগণ বলেন রাতে চিনা বাদাম কোনো পাত্রে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে বাদাম খেলে শরীরের জন্য বেশি উপকার পাওয়া যায়।
সতর্কতা
কাঁচা চিনা বাদাম নিয়মিত মাঝারি মাত্রায় খেলে গলব্লাডার স্টোনের ঝুঁকি প্রায় ২৫% পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
উপসংহার
কাঁচা চিনা বাদাম একটি সস্তা কিন্তু পুষ্টিকর সুপারফুড। এটি হার্ট, মস্তিষ্ক, ত্বক, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। তবে যেকোনো খাবারের মতোই চিনা বাদামও পরিমিত মাত্রায় খাওয়াই শ্রেয়।
✨ Drifture-এ মন্তব্য করার সময় দয়া করে আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url